
ঐ নেমেছে কিউই দলের সেনাপতি কালাম ভাই,
বোলারকূলে ঝড়ের তালে, বেতাল অবস্থা তাই।
কিছুদিন আগে শেষ হওয়া বিশ্বকাপে ভয়ডরহীন, আনন্দময় অধিনায়কত্ব আর শুরুতেই বোলারের কোমর ভেঙে দেওয়া ঝড় তুলে কোটি ক্রিকেটপ্রেমীর মন জয় করা ম্যাক তার জাদু দেখাচ্ছেন আইপিএলেও। চোখ ধাঁধানো সব নতুন নতুন শটে ঠিক ঠিক ১০০ করলেন। মাত্র ৫৬ বল খেলে। হায়দারাবাদের বোলারদের নামিয়ে আনলেন পাড়ার বোলারের মানে! অবশ্য এই মানুষটি যেদিন ছন্দে থাকেন, সেদিন বিশ্বসেরা বোলারকেও যদি আপনি প্রথম দেখেন, মনে করবেন এও পাড়ার বোলার!
বিশ্বকাপ ফাইনালে বিরাট একটা রসগোল্লা উপহার পেয়েছিলেন মিচেল স্টার্কের কাছ থেকে, তার এই গোল্লায় ফেরত যাবার বড় অবদান আছে দলের হারে। তবে গতকাল ১০০ করে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, ম্যাক ফুরিয়ে যায়নি। ট্রেন্ট বোল্টের করা ইনিংসের শেষ ওভারের শেষ বলে যেভাবে সেঞ্চুরিতে পৌঁছালেন, সেটা কোন উপন্যাসের নায়ক করলেই মানাতো ভালো মনে হয়!
কিন্তু ম্যাক তো ২০১৫ বিশ্বকাপের নায়ক। আইপিএলেও তার ছাপ থাকবে, এটাই তো স্বাভাবিক। সেই প্রথম আসরের প্রথম শতকটিও কিন্তু এই মানুষটির করা, তখন খেলতেন কোলকাতার হয়ে। ক্যাপ্টেন কুল- মহেন্দ্র সিং ধোনির দলে এবার আছেন তিনি। বেশিরভাগ রান করেছেন অন সাইডে। পেসারের বিপক্ষে অবলীলায় ডাউন দ্য উইকেটে এসে যেভাবে পুল করেন সেটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই বিখ্যাত মানুষ, চুইঙ্গাম চিবাতে চিবাতে ছক্কা হাঁকানো স্যার ভিভকে মনে করিয়ে দেয়।
‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য,
উচ্চ যেথা শির’
তিনি যদি মনে করেন বলটাকে মাঠের বাইরে পাঠাতে হবে, সেটা তিনি পাঠাবেনই, সে যেভাবেই হোক । দিলস্কুপের নতুন সংস্করণ তিনি কাল দেখালেন, যেখানে বোলার সাবধান হবার পরও অসাধারণভাবে স্কুপ খেলেন তিনি। ট্রেন্ট বোল্টের বলকে উসাইন বোল্টের গতিতে বাইরে পাঠানো তার পক্ষেই সম্ভব।
এক সময় মনে হচ্ছিলো শতক মনেহয় হবেনা, কারণ তার অধিনায়ক। মহেন্দ্র সিং এদিন ঘূর্ণি জাদুকরদের এমন ধোলাই দিয়েছেন, যাতে মনে হচ্ছে এদের আবার স্কুলে পাঠাতে হবে স্পিন শিখাতে!
কুড়ি ওভারের ক্রিকেটের সৃষ্টি হয়েছিলো মানুষকে বিনোদন দেবার জন্য। যে দলে ম্যাকের মতো ব্যাটসম্যান থাকে, তার খেলা দেখতে পয়সা খরচ করতেও মানুষের আপত্তি থাকার কথা নয়!
‘ম্যাককালাম তুনে কামাল কিয়া ভাই!’