
লিখেছেন – আহসানুল হক
২৩ জুন ১৯৭৬, সেনেগাল এর ডাকারে জন্মগ্রহণ করেন প্যাট্রিক ভিয়েরা। খুব অল্প বয়সেই পরিবারের সাথে ফ্রান্সে অভিবাসী হতে হয় তাকে। তার যখন বয়স মাত্র ৮ বছর তখনই তার বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।তার মাতামহ ফরাসী সেনাবাহিনী তে কর্মরত থাকায় ফ্রান্সের নাগরিকত্ব পেতেও ঝামেলা হয়নি। অন্যান্য আফ্রিকান অভিবাসীদের মতোই সাধারন গল্প।
তবে ভিয়েরার গল্প যে সাধারন হবে না তা যেন নিয়তি ছিল। ফুটবল পাগল ছেলেটিকে ১৯৮৪ সালে এফসি ত্রাপেজ নামের একডেমীতে অ-৯ বিভাগে সুযোগ দেওয়া হয়। বছর দুয়েক সেখানে খেলার পর যোগ দেন এফসি ড্রোয়াইজ এর যুবদলে। সেখানে পাচ বছর থাকা অবস্থাতেই তার প্রতিভার বিচ্ছুরণ দেখা যেতে থাকে। ১৯৯১ সালে ১৫ বছর বয়সেই তাকে দলে ভেড়ায় লিগ ওয়ানের দল ট্যুরস। এখানে উল্লেখ্য এই দলের একাডেমী থেকেই পরবর্তিতে লরেন্ত কসিয়েনলি এবং ওলিভিয়ের জিরুদ এর মত খেলোয়ারদের উত্থান হয়।
ট্যুরস এর হয়ে রিজার্ভ একাদশ এ প্রচুর ম্যাচ খেললেও পেশাদার অভিষেক হয়নি ভিয়েরার। প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়ার আশায় এবার তিনি পাড়ি জমান কান এ। এফসি কান এর হয়েই তার পেশাদার ক্যারিয়ারের সুচনা হয় ১৯৯৪ সালে, তখনও তার ১৮ বছর বয়স হয়নি। শীঘ্রই দুর্দান্ত খেলে বড় বড় দলের নজর কেড়ে নেন এই দীর্ঘদেহী সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। ১৯ বছর বয়সেই হয়ে যান দলের অধিনায়ক। তবে ক্যারিয়ার এর অসাধারন শুরু ইঙ্গিত করছিল তার ঠিকানা হতে যাচ্ছে ইউরোপের সেরা দলগুলোর কোনো একটি।

১৯৯৫ সালের গ্রীষ্মে এসি মিলানের ম্যানেজার ফ্যাবিও ক্যাপেলো তাকে সাইন করান। তবে মিলানে তার প্রায় পুরো সময়টাই কেটেছে রিজার্ভ দলের হয়ে, মুল দলের হয়ে ম্যাচ খেলেছিলেন মাত্র দুইটি। মৌসুমের শেষে ক্যাপেলো রিয়াল মাদ্রিদে চলে যাবেন নিশ্চিত হওয়ায় ভিয়েরার ও মিলান ক্যারিয়ার অনিশ্চয়তায় পড়ে যায়।
অন্যদিকে একই সময়ে লন্ডনের দল আর্সেনাল এর ম্যানেজার পদে যোগ দেওয়া নিশ্চিত হয় অখ্যাত আর্সেনে ওয়েঙ্গারের। যিনি অক্টোবর এ দায়িত্ব নেবার আগে পর্যন্ত প্যাট রাইস অন্তর্বর্তীকালীন ম্যানেজার ছিলেন (পরে আর্সেনের সহকারী)। মোনাকোর ম্যানেজার থাকা অবস্থাতেই ভিয়েরার উত্থান দেখেছিলেন আর্সেনে। তার আগ্রহে এবং পরামর্শেই আর্সেনাল চিফ এক্সেকিউটিভ ডেভিড ডিন মিলান থেকে উড়িয়ে আনেন ভিয়েরাকে। আর ভিয়েরাও আর্সেনের অধীনে খেলার জন্য আয়াক্স এর মত ঐতিহ্যবাহী ইউরোপীয় পরাশক্তির প্রস্তাব আগ্রাহ্য করে আর্সেনালে যান।
১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ এ শেফিল্ড ওডেনসডে এর বিপক্ষে বদলী হিসেবে অভিষেক। ওই ম্যাচের পরে টাইমের প্রতিবেদন এ বলা হয় দীর্ঘদিন পর আর্সেনালের মিডফিল্ড এ বৈচিত্রের ছোঁয়া দেখা যাচ্ছে। তার তিন দিন পরেই প্রধম একাদশে অভিষেক হয় মিডলসবোরে এর বিপক্ষে। আর্সেনে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডেভিড প্ল্যাট এর সঙ্গে তাকে হোল্ডিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলাতে শুরু করেন। অসাধারনভাবেই মানিয়ে নেন নতুন রোলে। দলের হয়ে প্রথম গোল ও পেয়ে যান ডিসেম্বর এ ডার্বি কাউন্টির বিপক্ষে কঠিন একটা ম্যাচে।
তার ধারাবাহিক অসাধারন পার্ফমেন্স এবং মাঠের লড়াকু মনোভাব তাকে দ্রুতই দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় করে তোলে। কিংবদন্তি স্ট্রাইকার ইয়ান রাইট ভিয়েরা সম্পর্কে বলেন:”It’s been a while since we’ve had a midfield player who looks at the front man’s run first and then looks at other options. He makes dream passes forward and he’s already put me in several times.”–Ian Wright, November 1996
তাকে আরেক সাবেক আর্সেনাল গ্রেট মিডফিল্ডার পল ডেভিস এর সাথে তুলনা করা হতে থাকে। তবে ভিয়েরা নিজের লীগ্যাসি স্থাপন করার পথেই হাটছিলেন।
ভিয়েরা প্রথম মৌসুমে দলের হয়ে সব মিলিয়ে ৩৮ ম্যাচ খেলেন। আর্সেনাল তৃতীয় হয়ে লিগ মৌসুম শেষ করে এবং গোল ব্যাবধানে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ স্থান হারায়।
পরের মৌসুমে আর্সেনালে যোগ দেন আরেক অখ্যাত ফরাসী ইমানুয়েল পেতিত। ভিয়েরা-পেতিত জুটি আর্সেনালের মিডফিল্ডকে করে তুলে একই সাথে বিধ্বংসী এবং দুর্ভেদ্য।

ভিয়েরা ছিলেন একজন পরিপুর্ন মিডফিল্ডার। শক্তিশালী, আগ্রাসী ট্যাকলার। চমৎকার ট্যাকটিকাল সেন্স এবং বুদ্ধিমত্তার সাথে ইশ্বরপ্রদত্ত স্কিল, ভিশন মিলিয়ে নিঁখুত একটি প্যাকেজ। সবার থেকে আলাদা হয়ে ছিলেন তার কবিতার মত নির্ভুল ছন্দবদ্ধ পাস গুলো দিয়ে।
১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে অনেক পিছনে থেকেও অবিস্বাস্য ভাবে আর্সেনাল জয় করে ঐতিহাসিক লিগ ও এফএ কাপ ডাবল। আর হোল্ডিং মিডফিল্ড পজিশনে নিজেকে বিশ্ব সেরা দের কাতারে প্রতিষ্ঠিত করেন ভিয়েরা। ওই মৌসুমে ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৩-২ গোলে জয়ের ম্যাচে তার করা গোলটা আর্সেনাল সমর্থকদের কাছে এখনও অমলিন।
একই বছর ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ ও জিতে নেন ভিয়েরা। বিশ্বকাপের সেরা একাদশেও তার নাম ছিল।
প্রিমিয়ার লিগ এর সেরা একাদশে সেন্ট্রাল মিডফিল্ড জায়গাটা নিজের সম্পত্তিই বানিয়ে ফেলেছিলেন। ১৯৯৮ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত প্রতি বছরই প্রিমিয়ার লিগের দলে তাকে রাখেন পেশাদার ফুটবল খেলোয়ার এবং ফুটবল বিশেষজ্ঞ রা।
অনবদ্য ছিলেন ব্যাক্তিগত পার্ফমেন্স দিয়ে তবে দলগত ভাবে আর্সেনালের সময় খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। টানা তিন বছর লিগে দ্বিতীয় হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। ২০০০ সালের উয়েফা কাপের ফাইনালে পেনাল্টি শ্যুটআউটে মিস করেন ভিয়েরা, হেরে যায় আর্সেনাল। পরের বছর এফএ কাপের ফাইনালে অসাধারন খেলেও এক মাইকেল ওয়েনের কাছে হেরে যায় আর্সেনাল। আর নিয়মিতভাবে প্রতি দলবদল জানালাতে প্রচুর গুজবের বিষয়বস্তু হতে থাকেন ভিয়েরা।
রিয়াল মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট ঘোষনা করেছিলেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ড পজিশনে বিশ্বের সেরা ফুটবলার ভিয়েরা কে পাওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে রিয়াল মাদ্রিদ।অ্যালেক্স ফার্গুসন এবং ম্যানইউ ভিয়েরা কে কেনার জন্য চেষ্টা করেছিল। আর্সেনালের সাথে যোগাযোগ না করে সরাসরি ভিয়েরা এর সাথে যোগাযোগ করায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় আর্সেনাল। আর্সেনে বলেন:”They made an approach to Patrick without contacting us, and that does not really respect the rules.”
ইতালীয় দুই জায়ান্ট জুভেন্টাস এবং ইন্টারন্যাসিন্যাল প্রতি গ্রীষ্মেই ফরমাল বিড করছিল।
২০০২ সালের গ্রীষ্মে আর্সেনাল থেকে ভিয়েরার চলে যাওয়ার খবরটা অনেকেই নিশ্চিত করেছিল এবং বলা হচ্ছিল আর্সেনাল মাইকেল ক্যারিককে রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে ওয়েস্টহ্যাম থেকে আনছে। তবে সব গুঞ্জন মিথ্যে প্রমান করে ভিয়েরা থেকে যান। শুধু তাই নয় আর্সেনালের সহ অধিনায়কও করা হয় তাকে।
একই বছরে আর্সেনাল তিন বছরের ট্রফি ক্ষরা কাটিয়ে আবার ডাবল (লিগ+ এফএ কাপ) জিতে নেয়। অধিনায়ক টনি অ্যাডামস এর অনুপস্থিতি তে অনেক ম্যাচেই ভিয়েরা অধিনায়কত্ব করেন। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে লিগ ট্রফি নিশ্চিত করা সেই জয়ের ম্যাচেও অধিনায়ক ছিলেন।
এর পরের মৌসুমে টনি অ্যাডামস এর অবসরের পর থেকে ক্লাব ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ভিয়েরা। আর্সেনাল এফএ কাপ জিতলেও লিগ ট্রফি হাতছাড়া করে অনেক এগিয়ে থেকেও। তবে অক্ষুণ্ণ রাখে এফএ কাপ শিরোপা।
এর পরের ঐতিহাসিক মৌসুম ২০০৩-০৪। আর্সেনাল অপরাজিত থেকে লিগ জিতে নেয়। ভিয়েরার অধিনায়কত্বে আর্সেনাল হয়ে উঠে অদম্য। অনেক গুলো কঠিন ম্যাচে জয় ওই দলটির মানসিক দৃঢ়তার পরিচয় দেয়। আর এতে ভিয়েরার আগ্রাসী মনোভাব, আক্রমনাত্মক ব্যাক্তিত্বের অবদান ছিলো অনেক।
ভিয়েরার জন্য একেবারে সহজ ছিলো না মৌসুমটা। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে বিস্ফোরক ম্যাচটিতে রুড ভ্যান নিস্টলরয়ের অভিনয়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ভিয়েরা। ওই ঘটনা পরম্পরায় তার এবং সতীর্থদের প্রতিক্রিয়ার ফলে সব মিলিয়ে আর্সেনাল খেলোয়ারদের £২৭০০০০ জরিমানা এবং একাধিক খেলোয়ারকে বিভিন্ন মেয়াদে নিষিদ্ধ করে এফএ।
নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে ভিয়েরা সেই চিরচেনা মিডফিল্ড জেনারেল হয়েই দেখা দেন। জিলবার্তো সিলভার সাথে তার মিডফিল্ড জুটি কে প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসের অন্যতম সেরা জুটি বলা হয়। আর্সেনাল এবার লিগ জয় নিশ্চিত করে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী টটেনহ্যাম এর মাঠে। সেই ম্যাচে গোল করেন ভিয়েরা।

এর পরের মৌসুমটি ছিল আর্সেনালের জার্সি গায়ে এ কিংবদন্তীর শেষ মৌসুম। আর্সেনাল লিগের মাঝপথে খেই হারিয়ে ফেলায় শেষ দিকে ভালো করেও ২য় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করে। এর মাঝে ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে লিগ ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে টানেলে ম্যানইউ অধিনায়ক রয় কিন এর সাথে বাদানুবাদ থেকে হাতাহাতি পর্যন্ত গড়িয়েছিলো। সব সময়েই আক্রমনাত্মক মানসিকতা লালন করে গিয়েছিলেন ভিয়েরা।
তবে আর্সেনাল এফএ কাপ ঠিকই জিতে নেয় ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে। ভিয়েরার আর্সেনালের হয়ে শেষ বারের মত বলে পা ছোঁয়ান পেনাল্টি শ্যুটআউট এর জয়সুচক শট টিতে।
২০০৫ সালের গ্রীষ্মে জুভেন্টাসের প্রস্তাবে রাজি হন প্যাট্রিক ভিয়েরা। ১৪ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে তাকে আর্সেনাল থেকে সাইন করায় তুরিনের ক্লাবটি। আর্সেনে ওয়েঙ্গার ভিয়েরার ট্রান্সফারে বাদ না সাধার কারন জিজ্ঞেস করলে বলেন:
“When Cesc Fàbregas was 18, 19, I would play him in a 4–4–2 with Patrick Vieira and I saw it did not work. Then I had the decision to make about letting Patrick go, because Gilberto Silva and Vieira worked, Fabregas and Silva worked, but I could not play Fàbregas and Vieira. But Fàbregas was 19 and if he did not play I knew he would want to go, so we risked destroying everything, all the work we had put into this player.”
গানার্সদের হয়ে ৪০৬ ম্যাচে ৩৩ গোল করেন এই ফ্রেঞ্চ রোল মডেল। জিতেছেন ১০ টি মেজর ট্রফি.. ৩ টি প্রিমিয়ার লিগ, ৪ টি এফএ কাপ এবং ৩ টি কম্যিউনিটি শিল্ড। ২০০৬ সালে বার্গক্যাম্প এর বিদায়ী সংবর্ধনার প্রীতি ম্যাচে আরেকবার লাল সাদা জার্সি গায়ে তুলেছিলেন.. সেটাই শেষবার।
আর্সেনালের সমর্থকদের ভোটে আর্সেনালের সর্বকালের সেরার তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছেন ভিয়েরা। ২০১৪ সালের এপ্রিলে আর্সেনালে খেলা ৯ম খেলোয়ার হিসেবে জায়গা করে নেন ন্যাশনাল ফুটবল মিউজিয়াম এর হল অব ফেম এ।
জাতীয় দলের হয়েও দীর্ঘ ক্যারিয়ার ছিল ভিয়েরার। ১৩ বছরের খেলেছেন ১০৭ টি ম্যাচ জিতেছেন ১৯৯৮ বিশ্বকাপ, ২০০০ ইউরো এবং ২০০১ এর কনফেডারেশন কাপ। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে রানার্স আপ ফ্রান্স দলে বাছাই পর্বে এবং গ্রুপ পর্বে অধিনায়কও ছিলেন।
অবশ্য আর্সেনাল ছাড়ার পর ভিয়েরার ক্লাব ক্যারিয়ার কখনোই আগের উচ্চতায় পৌছাতে পারে নি। জুভেন্টাস ভিয়েরার প্রথম মৌসুমেই ম্যাচ পাতানোর দায়ে রেলিগেটেড হয়। ইন্টারন্যাসিন্যাল কিনে নেয় ভিয়েরা কে। সেখানে টানা তিন বার লিগ জয়ী দলের সদস্য হলেও ইনজুরি এবং পড়তি ফর্মের কারনে প্রথম একাদশে নিয়মিত ছিলেন না। তিন মৌসুম ইন্টার এ কাটানোর পর আবার ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন ভিয়েরা। এবার ম্যানচেষ্টার সিটির হয়ে। ভিয়েরার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে ফ্রি এজেন্ট ভিয়েরাকে সাইন করিয়েছিল দলটি। দেড় মৌসুম সেখানে খেলোয়ার হিসেবে কাটিয়ে খেলোয়ারি জীবনের ইতি টানেন ভিয়েরা। এখন একই ক্লাবের রিজার্ভ দলের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি।
প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে সেরা ফুটবলারদের ছোট্ট তালিকাটাতেই থাকবেন এই ফুটবল লিজেন্ড।