
আমাদের ক্রিকেটের স্বপ্ন বোনা শেখানো নায়ক; হাবিবুল বাশার সুমন।
হাবিবুল বাশার সুমনের এক সাক্ষাৎকার দেখে বুঝলাম তার নেতৃত্বে যখন বাংলাদেশ খেলত, পরাজয়ের পর বা মাঠে প্রতিপক্ষের টিপ্পনী দেখে তার খুব আফসোস হতো! এই আফসোসটা অনেকদিন ছিল তার।
বাংলাদেশ যেবার টেস্টে ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করে আমার প্রথমে মনে পড়েছিল এই হাবিবুল বাশার সুমনের কথা! আহা, কী কষ্টে তিনি দিন কাটিয়েছিলেন! যখন বছরের পর বছর জেতা যেতো না। প্রতিপক্ষ মাঠে নামার আগে আমাদের বিপক্ষে জিতে যেতো! আমাদের লক্ষ্য ছিল ৫০ ওভার ব্যাটিং করা, কোনরকমে ঐ ৫০ ওভারে ২০০ রান স্পর্শ করা, তবুও পারতাম না। তাই যদি আনন্দ করতে হয় তবে সেই আনন্দটা করবে হাবিবুল বাশার! তার আফসোস আর আক্ষেপের দিন শেষ এখন তো শুধুই আনন্দের দিন। আমরা টেস্ট আঙ্গিনায় প্রবল প্রতাপে পারফর্ম করতে না পারলেও অন্তত ওয়ানডে ফরম্যাটটা তো আমাদের! সেখানেই না হয় আনন্দ পাক হাবিবুল বাশার সহ আক্ষেপে পোড়া আমাদের সকল সাবেক ক্রিকেটার ও অধিনায়ক।
টেস্ট ক্রিকেটে ৯৯ ইনিংসে তার করা ২৪ টি ফিফটির জন্য ‘মি. ফিফটি’ নামকরণ হওয়া! তার ৩০ গড়ের প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে করা তিন হাজার রান যে অনেক মূল্যবান! দেশের ক্রিকেটের উত্থানের ঐ সময়টায় আমাদের ব্যাটিংয়ের মূল স্তম্ভ তো তিনিই ছিলেন! ২৪ টা অর্ধশতকের সাথে রয়েছে তিনটা শতক। আমাদের ক্রিকেটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন তো করেছেন এই সুমনই! অধিনায়ক হিসেবে আমাদের প্রথম টেস্ট ম্যাচ, টেস্ট সিরিজ জয়ের কৃতিত্ব তার। আজকের এই নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি তো হাবিবুল বাশার সুমনই গড়ে দিয়ে গেছেন।
ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৪ অর্ধশতকে ২১ গড়ে ২১৬৮ রান। তবে সম্ভবত সবচেয়ে মূল্যবান ছিল তার নেতৃত্বগুণ! ৬৯ ওয়ানডে ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে আমাদের জিতিয়েছেন ২৯ ম্যাচ। তখনকার খর্বশক্তির দল বা তথাকথিত মিনোজ হিসেবে বেশ দারুণ রেকর্ড বলা যায়!
১৯৭২ সালের আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেন আমাদের জিততে শেখানো, আমাদের ক্রিকেটে স্বপ্ন বুনতে উৎসাহিত করা হাবিবুল বাশার সুমন। খেলোয়াড়ি জীবন সমাপ্ত করে এখন আমাদের নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। জন্মদিবসের শুভেচ্ছা আর শুভকামনা রইল তাঁকে।
লিখেছেন – রিফাত এমিল