
এক যুগ ধরে নিজ কাঁধে পুরো বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভার বহন করে চলা এক আভিজাত্য সাকিব আল হাসান। কখনো ব্যাটে, কখনো বলে আবার কখনো দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে মিটিয়ে চলেছে দলের চাহিদা। দ্রুত তিন উইকেট পড়ে গেছে দলের, আপনার মনে হবে ‘আরে সাকিব আছে তো!’; শুরুতে ব্রেক থ্রু বা অনেকক্ষণ উইকেট পড়ছে না, আপনার মনে হবে ‘সাকিব এসে উইকেট নিবেই!’
এই বিশ্বাস সাকিব আল হাসান একদিনে অর্জন করেনি। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ব্যাটে বলে সমান পারফর্ম করে অর্জন করেছে। ব্যাটে বলে উভয়ক্ষেত্রে তার দিকে তাকিয়ে থাকি আমি, আপনি, পুরো বাংলাদেশ!
সেবার ইংল্যান্ড এসেছে আমাদের দেশে খেলতে। ওয়ানডে ম্যাচে উইকেট নেওয়ার পরে টাইগার্সদের অতিরিক্ত উদযাপন নাকি বাটলারের পছন্দ হয় নাই! নানান তর্ক জন্মেছিল সেবার! টেস্টে এসে প্রথম ম্যাচটা সমান তালে লড়ে আমরা ২২ রানে হেরে যাই। পরের টেস্টে ঘটে ইতিহাস; ইংলিশ বধের ইতিহাস। তরুণ মিরাজ আর সাকিবের হাতে রচিত হয় সে ইতিহাস।
রান তাড়া করতে নেমে ইংলিশরা ওপেনিং জুটিতে বড় রান তুলে ফেলে! মনে শংকা জাগে আবার কী তীরে এসে তরী ডুবানো? আস্থা ছিল আমাদের একজন সাকিব আল হাসান আছে বলেই। আর অভিষেকেই নিজের সামর্থ্যের জানান দেওয়া মিরাজের পারফরমেন্স!
বেন স্টোকসকে ফেরাল সাকিব। পুরো স্টেডিয়াম আর টিভিসেটের সামনে পুরো বাংলাদেশ আনন্দ উল্লাস শুরু করে দিয়েছিল; জয় অনকটা নিশ্চিত ছিল বলেই! সাকিব এসে হঠাৎ স্যালুট জানালেন। কোন উদযাপন নেই; শুধু স্যালুট। স্তব্ধ করে দিলেন স্টোকসকে, পুরো ইংল্যান্ড দলকে।
সাকিব সম্ভবত স্তব্ধ করে দিয়েছিল জিওফ্রে বয়কটদের মতো সকল সমালোচকদের। যারা বিভিন্ন সময়ে নানান সমালোচনা করেছিল বাংলাদেশের। জানান দিয়েছিল, ‘দেখে নাও আমরাও টেস্ট জিততে পারি। তাও টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে কুলীন সদস্যকে তিন দিনে টেস্ট হারিয়ে!’
এমন হবে কেউ ভেবেছিল? এর আগে মাঠে আমাদের কেউ মাঠে এমন করেছিল? শুধু একজন সাকিব বলেই হয়েছিল সম্ভব। প্রতিপক্ষের সমস্ত দর্প নিজের পারফরমেন্স দিয়ে চুরমার করতে পারে তো এক সাকিবই। প্রিয় সাকিব, ইনজুরিটা কাটিয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে মাঠের ক্রিকেটে ফিরুন। আমি, আমরা, পুরো বাংলাদেশ আপনার অপেক্ষায়।
সেই স্যালুট! এই বাংলার নবাবের স্যালুট! ইংলিশদের স্তব্ধ করে দেওয়া সেই স্যালুটের দুবছর হলো আজ।
::: রিফাত এমিল :::