
মেক্সিকো কোচ হুয়ান কার্লোস ওসোরিও কিভাবে নিজের কোচিং স্কিল বৃদ্ধি করেছেন জানেন? ইংল্যান্ডের লিভারপুলে এভারটন সমর্থক এক পরিবারে বাসায় ভাড়া থাকতেন তিনি, এই শতকের শুরুর দিকে। সেই ফ্ল্যাটের জানালা দিয়ে লিভারপুলের ট্রেইং গ্রাউন্ডে খেলোয়াড়েরা কিভাবে অনুশীলন করছে কি কৌশল খাটাচ্ছে সব দেখা যেত। বহিরাগত হবার কারণে ওসোরিওকে লিভারপুলের মেলউড ট্রেনিং গ্রাউন্ডে ঢুকতে দেওয়া হত না, তখন তিনি একটা মই যোগাড় করে দেয়ালে উঁকিঝুঁকি মেরে লিভারপুলের ট্রেনিং দেখতেন, দেখতেন তৎকালীন কোন জেরার্ড হুলিয়েরের কৌশল। সেই তুলনায় লিভারপুল শহরের আরেক ক্লাব এভারটন বেশ বন্ধুবৎসল ছিল, তাঁকে মাঠে ঢুকতে দিত তারা। এই দুই ক্লাবের ট্রেনিং দেখে দেখেই লাতিন আমেরিকান স্টাইলের ফুটবলের পাশাপাশি ইউরোপিয় স্টাইলটাও ভালোই রপ্ত করেছেন ওসোরিও। তাঁর মেক্সিকো দলের খেলা দেখলেই সেটা বোঝা যায়। বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে এই ওসোরিও ২৩ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন, দেখে নেওয়া যাক কে কে আছেন এখানে!
গোলরক্ষক
- হোসে দে হেসুস কোরোনা (ক্রুজ আজুল)
- গিলের্মো ওচোয়া (স্ট্যান্ডার্ড লিয়েগে)
- আলফ্রেডো তালাভেরা (তোলুকা)
ডিফেন্ডার
- রাফায়েল মার্কেজ (আটলাস)
- হুগো আয়ালা (টিগ্রেস)
- কার্লোস সালসেদো (আইনট্র্যাখট ফ্র্যাঙ্কফুর্ট)
- ডিয়েগো রেয়েস (পোর্তো)
- মিগুয়েল লায়ুন (সেভিয়া)
- হেক্টর মোরেনো (রিয়াল সোসিয়েদাদ)
- এডসন আলভারেজ (ক্লাব আমেরিকা)
- হেসুস গ্যালার্দো (মন্তেরেই)
মিডফিল্ডার
- জিওভানি ডস সান্টোস (লস এঞ্জেলস গ্যালাক্সি)
- জোনাথান ডস সান্টোস (লস এঞ্জেলস গ্যালাক্সি)
- হেক্টর হেরেরা (পোর্তো)
- মার্কো ফাবিয়ান (আইনট্র্যাখট ফ্র্যাঙ্কফুর্ট)
- আন্দ্রেস গুয়ার্দাদো (রিয়াল বেতিস)
- হাভিয়ের আকুইনো (টিগ্রেস)
- হেসুস কোরোনা (পোর্তো)
স্ট্রাইকার
- হিরভিং লোজানো (পিএসভি আইন্দহোভেন)
- হাভিয়ের চিচারিতো হার্নান্দেজ (ওয়েস্টহ্যাম)
- কার্লোস ভেলা (লস এঞ্জেলস)
- রাউল জিমেনেজ (বেনফিকা)
- ওরিবে পেরালতা (ক্লাব আমেরিকা)

রাফায়েল মার্কেজ এবারো আছেন। এই বিশ্বকাপে রাফায়েল মার্কেজই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি কিনা ২০০২ বিশ্বকাপেও ছিলেন। যদিও মূল একাদশে সুযোগ হয়ত হবেনা তাঁর। মূল গোলরক্ষক হিসেবে গত বিশ্বকাপের বিস্ময় গিলের্মো ওচোয়া রয়েছেন। ৪-৩-৩ ফর্মেশনে ডিয়েগো রেয়েস ও হেক্টরে মরেনোর সেন্ট্রাল ডিফেন্সিভ জুটির দুপাশে আছেন কার্লোস সালসিদো (রাইটব্যাক) ও মিগুয়েল লায়ুন (লেফটব্যাক)। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে হেক্টর হেরেরার কাছ থেকে কোচ ওসোরিওর প্রত্যাশা প্রতিপক্ষের পা থেকে বলগুলো কেড়ে নেবেন ও বাতাসে ভেসে আসা বলগুলো ডিফেন্স লাইনের কাছে যাওয়ার আগেই তিনি ক্লিয়ার করবেন, যে কাজটা আগে রাফায়েল মার্কেজ করতেন। তবে মাঝে মাঝেই হেরেরা এই কাজে ভুল করে ফেলেন কেননা আদর্শ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার তিনি নন। হেরেরার সামনে বাকী দুই মিডফিল্ডার হিসেবে খেলন অ্যান্দ্রেয়া গুয়ার্দাদো ও সাবেক বার্সেলোনা মিডফিল্ডার জিওভানি ডস স্যান্টস। মূল স্ট্রাইকার হাভিয়ের হার্নান্দেজের দুইপাশে দুই উইঙ্গার হিসেবে খেলানো হয় মেক্সিকোর নতুন সুপারস্টার হিরভিং লোজানো আর হেসুস কোরোনাকে। বিকল্প স্ট্রাইকার হিসেবে দলে আছেন সাবেক আর্সেনাল স্ট্রাইকার কার্লোস ভেলা। হিরভিং লোজানো একজন আদর্শ ইনসাইড ফরোয়ার্ড, অর্থাৎ উইঙ্গার হলেও প্রায় সময়ই বক্সের ভিতরে ঢুকে গোল করার অভ্যাস আছে তাঁর। মাঠের মধ্যে ও মাঠের বাইরের কার্যকলাপ মিলিয়ে এর মধ্যেই মিডিয়া এই খামখেয়ালি তারকাকে নাম দিয়ে দিয়েছে নতুন লুইস সুয়ারেজ! আরেক উইংএ হেসুস কোরোনা ফর্মে থাকলে যেকোন ডিফেন্সকে তটস্থ করতে সক্ষম। দুইদিকে ভালো সার্ভিস পেলে মাঝে হাভিয়ের হার্নান্দেজও সেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সময়কার ফর্মে ফিরে আসতে পারেন।
গ্রুপে জার্মানি থাকার কারণে এই গ্রুপ থেকে পরবর্তী রাউন্ডে যে দুই দল উঠবে তাঁদের মধ্যে একটা দল নিশ্চিত। বাকী একটা জায়গা পাবার জন্য মেক্সিকো লড়বে দক্ষিণ কোরিয়া ও সুইডেনের সাথে। তারা কি পারবে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে প্রত্যেকবারের মত?
স্কোয়াড প্রিভিউ দেখুন আরও –
- ইংল্যান্ড
- আইসল্যান্ড
- ব্রাজিল
- কোস্টারিকা
- সুইডেন
- ফ্রান্স
- পর্তুগাল
- সেনেগাল
- মরক্কো
- আর্জেন্টিনা
- স্পেইন
- জাপান
- উরুগুয়ে
- সার্বিয়া
- জার্মানি
- মিশর
- রাশিয়া
- ক্রোয়েশিয়া
- বেলজিয়াম
- নাইজেরিয়া
- কলম্বিয়া
- ডেনমার্ক
- সুইজারল্যান্ড
- পেরু
- পোল্যান্ড