
আজকের দ্রগবা, এসিয়েন, ইতো, ইয়ায়া ত্যুরে রা বেড়ে উঠেছেন তাঁকে দেখেই। একজন আফ্রিকান হয়েও যে বিশ্ব ফুটবলে নিজের নামকে স্বর্ণাক্ষরে খোদাই করে রাখা যায় এই ধারণাটা প্রিন্স বোয়াটেং, সং, আসামোয়া জিয়ান, আদেবায়োরদের দেখিয়ে দিয়ে গেছেন তিনিই সবার আগে। তিনি আবেদি আইয়ু পেলে। বিশ্বসভায় আফ্রিকার প্রথম গৌরবাণ্বিত প্রতিনিধি। তিনি আফ্রিকার ‘পেলে’। ফুটবলে আফ্রিকাও যে বিশ্বের অন্যান্য মহাদেশের মতই সমানে টেক্কা দিতে পারে, সেটা তিনিই দেখিয়েছেলেন সবার আগে।
ক্লাব ক্যারিয়ার যথেষ্ট বর্ণাঢ্য তাঁর। নিজের দেশ ঘানা ছাড়াও মাতিয়েছেন সুইজারল্যান্ড, বেনিন, কাতার, ইতালি, ও সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য – ফ্রান্সের বিভিন্ন ক্লাবের মাঠ। ফ্রান্সের মার্শেই, লিওঁ কিংবা লিল এর সমর্থকেরা এখনো আবেদি পেলে বলতে পাগল। হবে নাই বা কেনো, এই আবেদি পেলের হাত ধরেই ত এসেছিল মার্শেইয়ের ও ফরাসী ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ! ১৯৯৩ চ্যাম্পিয়ন লিগ ফাইনালে এই আবেদি পেলের নৈপূণ্যেই মহাশক্তিধর এসি মিলান কে হারিয়ে দিয়ে এই মার্শেই-ই তখন জিতেছিল চ্যাম্পিয়নস লিগ।
১৯৯০ সাল থেকে টানা ছয় বছর ঘানাকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতেছেন আফ্রিকান কাপ ও নেশনস, ঘানার হয়ে করেছেন ৩৩ গোল, আসামোয়াহ জিয়ান কিছুদিন আগে যে রেকর্ডটা ভেঙ্গেছেন, ঘানার হয়ে সবচেয়ে বেশী গোল করার রেকর্ড। তবে দুর্ভাগ্য, ঘানার হয়ে কখনো বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি তিনি, তবে তাঁর এই আফসোসও মিটয়ে দিয়েছেন তাঁর তিন ছেলে – আন্দ্রে আইয়ু, ইব্রাহিম আইয়ু ও জর্ডান আইয়ু। ইব্রাহিম আর আন্দ্রে ঘানার হয়ে খেলেছিল ২০১০ বিশ্বকাপ, আর আন্দ্রে-জর্ডান খেলেছিলেন ২০১৪ বিশ্বকাপ। বাবা হিসেবেও আবেদি পেলে তাই যথেষ্ট ভাগ্যবান! টানা তিনবার আফ্রিকান ফুটবলার অফ দ্য ইয়ার হবার খেতাবও তাঁর কাছে।
আজ আফ্রিকান এই কিংবদন্তীর জন্মদিন। শুভ জন্মদিন আবেদি পেলে। আপনি না থাকলে হয়ত আফ্রিকান ফুটবলের রেনেসাঁই কখনো হত না!