
::::: রিয়াদ ইবনে মুসা :::::
এবারের পর্তুগালের হলে ইউরোজয়ী বিভিন্ন মিডফিল্ডারের মধ্যে যে মিডফিল্ডারকে নিয়ে ক্লাবগুলোর সবচাইতে বেশী আগ্রহ দেখা যাচ্ছে সেটা হল স্পোর্টিং লিসবনে খেলা হোয়াও মারিও। ইন্টার মিলান, চেলসি, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদসহ বেশ কিছু ক্লাবই তাঁকে পাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। কিছুদিন আগে লিভারপুল ত ৩০ মিলিয়ন ইউরোর একটা প্রস্তাবও দিয়ে বসেছিল স্পোর্টিং লিসবনকে, হোয়াও মারিওকে কেনার জন্য, কিন্তু লিসবন রাজী হয়নি। এখন তাঁকে কেনার ব্যাপারে মূল লড়াইটা হচ্ছে আন্তোনিও কন্তের চেলসি ও ফ্র্যাঙ্ক ডে ব্যোরের ইন্টার মিলানের মধ্যে।
টাকমাথার এই ভদ্রলোক মূলত একজন উইংগার। তবে ৪-৪-২ ফরমেশনে তিনি মিডফিল্ডে মাঝেও খেলতে পারেন। সদ্য ২৩ পেরোনো মারিও ২১ বছর বয়স থেকেই স্পোর্টিং লিসবনের নিয়মিত স্টার্টার, তবে লাইমলাইটে এসেছেন গত সিজনে দূর্দান্ত খেলে। বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, পাওয়ার ফুটবলে মার খেয়ে যান। তার উপর উচ্চতাও অনেক কম অন্যদের তুলনায়, ৫’১০”। উইংগার হিসেবে আরেকটি বড়সড় দূর্বলতা তার স্পিড। রোনালদো – ন্যানির মত একটানে ডি-বক্সে ঢুকে যাবেন, সেই সামর্থ্য কম। তবে এসব তিনি পুষিয়ে দেন তার অন্যান্য যোগ্যতা দিয়ে। এবং পাওয়ার ফুটবলের এই যুগেও তাকে বল পায়ে দেখতে ভালো লাগে মূলত এসব কারনেই – অসাধারণ স্কিল, প্রচন্ড উপস্থিত বুদ্ধি, এবং অসামান্য ফুটবল আইকিউ। পাসিং এক্যুরেসি দুর্দান্ত। হুটহাট থ্রু-বল ছেড়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স লাইন মুহূর্তেই ছন্নছাড়া করে তুলতে বেশ ওস্তাদ। স্পিড বেশি না থাকলেও পুরো ফরওয়ার্ড লাইনকে নিয়ে এক ঝটকায় উপরে উঠে আসার প্রতিভা জন্মগতভাবেই আছে তার মাঝে। প্রায় নিখুঁত ক্রস দেন ডি-বক্সের ভিতর।
সবচেয়ে বড় গুণ তার ক্রিয়েটিভিটি। কখন কার পায়ে বল ঠেলে দেওয়া বেস্ট ডিসিশন হবে তা বুঝে উঠতে সময় নেন না একদমই। আশেপাশের কয়েকজনের সাথে বোঝাপড়া ভালো থাকলে (যেটা তার লিসবনে আছে) প্রতিপক্ষের ডিফেন্স লাইনে আতংক ছড়াতে পারেন। বলের উপর কন্ট্রোল খুবই ভালো, উড়ে আসা বল গায়ে লেগে এদিক-ওদিক চলে যাবে না। প্রথম টাচেই পাস দিয়ে নিজের পজিশন খুঁজে নিতে পারেন বলে হুটহাট সুযোগ সৃষ্টি হয়। সারা মাঠ জুড়ে খেলতে পারেন। এটিও একটি বড় গুণ। ট্রেনিং এ প্রচন্ড পরিশ্রমী, ফাঁকি দেওয়ার বাজে রেকর্ড তার নেই। এইজন্যই, ২৩ বছরের হোয়াও মারিও দলবদলের বাজারে একটি বড় নাম। দ্রুতগামী এবং শরীর নির্ভর ফুটবল না খেলেও যিনি শুধু ট্যালেন্ট, ফুটবল সেন্স, ক্রিয়েটিভিটি এবং ডিসিশান মেইকিং এবিলিটির জন্য হয়ে উঠছেন বড় ক্লাবগুলোর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।