
এমনিতে শামীম চৌধুরীর কমেন্ট্রির বিশেষ ভক্ত নই। যেহেতু এটা আইসিসি’র কোনো টুর্নামেন্ট না, শুধুই একটা বাই-ল্যাটারাল সিরিজ সুতরাং শামীম চৌধুরী নিজেই বাংলায় মুস্তাফিজুরের সাক্ষাতকার নিতে পারতেন। বহু প্লেয়ারকেই মাতৃভাষায় সাক্ষাতকার দিতে দেখেছি। বেশিরভাগ পাকিস্তানি তো উর্দু ছাড়া কথা বলতেই পারে না! তবে একটা জিনিস এটা থেকেই বেরিয়ে এসেছে। মাশরাফি দোভাষীর ভূমিকায় যখন বললো, তুই অভিষেকে পাঁচ উইকেট পাইছিস, তোর কী মনে হয় টাইপ কিছু একটা তখনই মাশরাফির আরেকটা রূপ বের হয়ে এলো। একটা শব্দ থেকে, ‘তুই’। তার একটু আগেই মুস্তাফিজকে জড়িয়ে ধরে মাথার চুল এলোমেলো করে দিয়েছেন আর কপালে চুমু দেওয়া তো লাইভ দেখিয়েছে টিভি। মাশরাফি শুধু এই দলটার দলনেতা না, ও এই দলটার অভিভাবক। এমন আর কেউ কখনো আসেনি বাংলাদেশ ক্রিকেটে।
আরেকটা ব্যাপার নজর কেড়েছে। বিরাটকে আউট করে তাসকিন যে চিৎকারটা দিয়েছে, রোহিতের আউটে মাশরাফি বলটা যেভাবে মাটিতে ছুড়ে ফেলেছে, রাহানির আউটের পর অভিষেকেই মুস্তাফিজ যেভাবে চোয়াল শক্ত অভিব্যক্তি দিয়েছে বা মাহিকে আউট করে সাকিব যেভাবে চিৎকার দিয়ে হাত ছুড়ে উদযাপন করেছে তাতে বাংলাদেশ-ভারত দ্বেরথটা আর শুধু ‘খেলা’র মাঝে সীমাবদ্ধ নেই তা স্পষ্ট বোঝা গেছে। আনন্দবাজার পত্রিকার রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায় যেমন আজ লিখেছেন, ‘বিরাটকে আউট করে তাসকিন আহমেদ যে চিৎকার করলেন, তাতে বোঝা যায় ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেট-সম্পর্ক এখন কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে।’ আবার বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেটে এখন নতুন একটা মাত্রা চলে এসেছে কিনা জানতে চাইলে সুনীল গাভাস্কার বলেছেন, ‘হ্যাঁ, এটা হচ্ছে। দুটো দলই, দুই দলের খেলোয়াড়েরাই মনে করে তারা জিততে পারে। ওয়ানডেতে তারা সামান্য ছাড় দিতেও নারাজ। আর আপনার মধ্যে যখন এমন ভাবনা কাজ করবে, আপনি এমনটাই খেলবেন।’
পরিশেষ, এই স্ট্যাটাস যখন লিখছি তার মাঝেই মা খেতে ডাকছে। ভাবলাম মা কে বলি, মা, ভারতীয় দল গতকাল রাতে না খেয়ে ঘুমিয়েছে। এখন অবধি লজ্জায় কিছু খেয়েছে কী-না কে জানে! অতিথিকে অভূক্ত রেখে খাওয়া ঠিক হবে?